ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার বাস্তবিক উপায় ।

ছাত্র জীবন হচ্ছে জীবন গড়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় । একদিকে পড়াশোনা, অন্যদিকে ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবনা-এই সময়টা অনেকেই শুধু পড়ালেখায় সীমাবদ্ধ রাখে। কিন্তু বর্তমান ডিজিটাল যুগে ছাত্র জীবনে ইনকামের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব। আজকে আমরা জানবো কিভাবে একজন ছাত্র বাস্তবিকভাবে টাকা করতে পারে। সেটা নিজের দক্ষতা বা সময়কে কাজে লাগিয়ে ।

কেন ছাত্র জীবনে ইনকাম করা জরুরী?

ছাত্র জীবনে অর্থ উপার্জনের অনেকগুলো উপকারিতা রয়েছে:

. নিজের খরচ নিজেই চালাতে পারা

. অভিভাবকদের উপর নির্ভরতা কমানো

. নিজের আত্মবিশ্বাস ও দায়িত্ববোধ বাড়ানো

. ভবিষ্যতে ক্যারিয়ারের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া

এছাড়াও, ছোট থেকেই অর্থনৈতিক শিক্ষা পাওয়া। একজন মানুষকে ভবিষ্যতে সফল করতে তুলতে সাহায্য করে।

বাস্তবিক উপায়সমূহ:

১. ফ্রিল্যান্সিং- নিজের স্কিল দিয়ে আয় :

বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ইনকামের উপায় হল ফ্রিল্যান্সিং। আপনি যদি টাইপিং, ডিজাইন, ভিডিও, এডিটিং, ওয়েবসাইট বানানো, কন্টেন লেখা বা ডাটা এন্ট্রির মত স্কিলে পারদর্শী হন, তাহলে অনলাইনে ক্লায়েন্ট খুঁজে নিয়ে ঘরে বসেই আয় করতে পারবেন।

কোথায় করবেন এবং কোন প্ল্যাটফর্ম সাইট :

  • Fiverr.com
  • Upwork.com
  • Freelancer, people per hour

প্রতি মাসে আয় :

শুরুতে ২,০০০-৫,০০০ টাকা , পরবর্তীতে ২০,০০০+ আয় সম্ভব।

২. ব্লগিং ও গুগল অ্যাডসেন্স :

আপনি যদি লেখালেখি পছন্দ করেন, তাহলে নিজের একটা ওয়েবসাইট বানিয়ে নিয়মিত ব্লগ লিখতে পারেন। গুগল অ্যাডসেন্স, এর মাধ্যমে সেখানে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আপনি টাকা আয় করতে পারবেন।

যেসব বিষয় নিয়ে ব্লগ করতে পারেন:

  • শিক্ষা ও পরীক্ষার প্রস্তুতি
  • টেক রিভিউ বা টিপস
  • মোটিভেশন ও ক্যারিয়ার
  • ট্রেডিং নিউজ বা লাইভ স্টাইল

ওয়েবসাইট বানাতে: wordpress বা blogger দিয়ে সহজে শুরু করা যায়।

৩. ইউটিউব/ শর্ট ভিডিও বানিয়ে আয় :

অনেকেই এখন ইউটিউবে শর্টস ভিডিও বানিয়ে ইনকাম করছে। আপনি যদি ফুটবল, গেমিং, টিপস, ফানি কনটেন্ট বা মোটিভেশনাল ভিডিওতে আগ্রহী হন, তাহলে ইউটিউবে ক্যারিয়ার বানাতে পারেন।

ভিউ বানানোর টিপস:

  • ট্রেডিং টপিক নিয়ে ভিডিও বানান
  • আকর্ষণীয় থাম্বনেইল দিন
  • শুরুর ৩ সেকেন্ডেই দর্শককে ধরে রাখুন

আয় শুরু হয়:

১,০০০হাজার সাবস্ক্রাইবার এবং ৪,০০০ হলে

৪. ড্রপশিপিং- প্রডাক্ট ছাড়াই ব্যবসা :

আপনি যদি ব্যবসা করতে চান, কিন্তু পুঁজির অভাব হয়, তাহলে ড্রপশিপিং আপনার জন্য। এখানে প্রোডাক্ট নিজের কাছে না রেখেই আপনি অন্য কোম্পানির প্রোডাক্ট অনলাইনে বিক্রি করতে পারবেন।

প্রয়োজন:

  • Shopify বা woocommerce ওয়েবসাইট
  • ভালো মার্কেটিং
  • Facebook/ Instagram পেইজ

৫. ফরেক্স ট্রেডিং ও ক্রিপ্টো :

আপনি যদি মার্কেট বিশ্লেষণ করতে পারেন বা সেই আগ্রহ থাকে, তাহলে ফরেক্স ট্রেডিং ও ক্রিপ্টো একটি ভালো সুযোগ। তবে এটাতে কিন্তু খুব ঝুঁকিপূর্ণ আছে, তাই আগে শেখাটা জরুরী , বেশি বেশি প্র্যাকটিস করা দরকার।

প্রথমে করুন:

  • Demo Account দিয়ে প্র্যাক্টিস
  • ইউটিউব বা unemy কোর্স
  • দৈনিক নিউজ ফলো করুন

৬. অনলাইনে টিউশনি বা হোম টিউশন :

আপনি যদি পড়াশোনা ভালো হন, তাহলে ছোট ক্লাসের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পড়াতে পারেন, zoom বা google meet ব্যবহার করে সহজে ক্লাস নেওয়া যায়।

সুবিধা:

  • খরচ কম
  • সময় বাঁচে
  • ঘরে বসেই আয়

৭. আফিলিয়েট মার্কেটিং :

বিভিন্ন কোম্পানির প্রোডাক্ট এর লিংক শেয়ার করে আপনি কমিশন পেয়ে যেতে পারেন, নিজের ফেসবুক, ইউটিউব, ব্লগ, হোয়াটসঅ্যাপের লিংক শেয়ার করেই চলবে।

যেসব কোম্পানি আফিলিয়েট দেয় :

Amazon

  • Daraz
  • Clickbank
  • Bekash/ Recharge app

**কিছু বাস্তব টিপস :

১ শুরুতেই ইনকাম না হলে ধৈর্য ধরুন

২ একসাথে সব না করে, একটাই ফোকাস করুন

৩ প্রতিদিন ১-২ দুই ঘন্টা সময় দিন

৪ নিজেকে “ব্র্যান্ড” হিসেবে তৈরি করুন

শেষ একটা কথা বলে রাখি :

ছাত্র জীবন শুধু ভালো নম্বর পাওয়া জন্য নয়, বরং নিজের দক্ষতা গড়ে তোলার সেরা সময়। আপনি এখন থেকে সময়কে কাজে লাগিয়ে ইনকামের পথ তৈরি করতে পারেন। এতে করে ভবিষ্যতের জন্য আপনি আর শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলবেন।

মনে রাখবেন, আজকে ছোট এই উদ্যোগই আগামী দিনে বড় সফলতা

Leave a Comment