চীনের সাথে কিভাবে ব্যবসা করবেন | A to z আপনাদেরকে আজকে আমি গাইডলাইন দিব।

চীনের বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী দেশ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যর একটি অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। আপনি যদি একজন উদ্যোক্তা হন । এবং আপনি চীনের সাথে ব্যবসা করতে চান। তাহলে আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল জানতে হবে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা আলোচনা করব কিভাবে বাংলাদেশ থেকে চীনের সাথে সহজে কিভাবে লাভজনক ব্যবসা শুরু করা যায়।

চীনের ম্যানুফ্যাকচারিং হাব যেখানে লাখো পণ্য প্রতিদিন তৈরি হয় ।

১. আপনি কী ধরনের ব্যবসা করতে চান?

প্রথমেই আপনাকে ঠিক করতে হবে যে আপনি কোন পণ্য বা খাতে ব্যবসা করতে চান । চীনের সাথে ব্যবসার কিছু জনপ্রিয় খাত দেওয়া হলো :

  • ইলেকট্রনিক ও গ্যাজেট
  • মোবাইল এক্সেসরিস
  • গার্মেন্টস ফ্রেব্রিক ও ট্রিমস
  • হোম আপ্লায়েন্স
  • খেলনা ও উপহারসামগ্রী
  • ফার্নিচার ও ডেকোর
  • বিউটি প্রোডাক্ট ও স্কিন কেয়ার

২. ব্যবসায়িক লাইসেন্স ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করতে হবে আপনাকে।

আপনাকে চীনের সাথে ব্যবসা করতে হলে আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশের বৈধ ব্যবসার কাঠামো তৈরি করতে হবে। এইজন্য আপনার যা প্রয়োজন।

ট্রেড লাইসেন্স

  • VAT রেজিস্ট্রেশন
  • TIN সার্টিফিকেট
  • Import Registration Certificate (IRC)
  • Export Registration Certificate (ERC)

আপনাদের টিপস দেই: আপনার একটি কোম্পানি তৈরি না করেও ব্যক্তি হিসেবে ছোট পরিসরে শুরু করতে পারেন, তবে বড় ব্যবসার জন্য কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন করা উত্তম।

৩. আপনারা চীনা সরবরাহকারী (supplier) কোথায় খুঁজবেন

আপনি যদি চীনের সাথে ব্যবসা করতে যান, তাহলে সবার আগে দরকার একটি বিশ্বস্ত সাপ্লায়ার খুজে পাওয়া। নিচে কিছু জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম :

প্ল্যাটফর্ম: সুবিধা

  • Alibaba .com সবচেয়ে বড় b2b মার্কেটপ্লেস
  • Made-in-chaina.com টেকনিক্যাল পণ্যের জন্য ভালো
  • DHgate.mcom. ছোট পরিমাণ অর্ডারের জন্য
  • 1688.com চীনা অভ্যন্তরীণ মার্কেট , সবচেয়ে সস্তা (ভাষা চাইনিজ)

৪. স্যাম্পল অর্ডার যাচাই-বাছাই করা :

আপনারা যখন অর্ডার দিবেন অবশ্যই বড় অর্ডার দেওয়ার আগে অবশ্যই একটি স্যাম্পল অর্ডার নিন। এতে আপনার পণ্যর গুনমান, ডিজাইন ও সরবরাহকারী আচরন যাচাই করতে পারবেন আপনি।

টিপস : সরাসরি ভিডিও কলে সাপ্লারের সাথে যোগাযোগ করুন । প্রয়োজনে স্থানীয় সোর্সিং এজেন্ট সাহায্য নিন।

৫. দাম এবং পেমেন্ট প্রসেস :

আপনারা যখন পেমেন্ট করবেন তখন চীনের সাথে লেনদেনে নিরাপদ পেমেন্ট মেথড বেছে নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জনপ্রিয় কিছু পেমেন্ট অপশন

  • T/T (BANK TRANSFER)
  • Alibaba trade assurance (Highly recommend)
  • Paypal
  • Western Union
  • Lc ( letter of credit)-বড় অর্ডারের ক্ষেত্রে

৬. শিপিং পদ্ধতি ও কাস্টমস :

চীন থেকে পণ্য আনার দুটি বড় অপশন আছে :

শিপিং পদ্ধতি সময় খরচ পরিমাণ

  • Air Freight. ৩-৭ দিন বেশি। কম পণ্য
  • Sea Freight ১৫-৩০ দিন কম বড় পণ্য

বাংলাদেশে আসার পর পণ্য কাস্টম ক্লিয়ারেন্সর জন্য আপনাকে একটি অভিজ্ঞ Custom Clearing Agent নিয়োগ করতে হবে।

৭. প্রতারণা থেকে বাঁচবেন কিভাবে সেটির উপায় :

চীনের সাথে অনলাইন ব্যবসা এর কিছু ঝুঁকি থাকে, যেমন :

  • নকল বা নিম্নমানের পণ্য
  • সময় ডেলিভারি না পাওয়া
  • প্রতিরোধের উপায়:
  • ভেরিফায়েড সাপ্লায়ার বেছে নিন
  • ট্রেড অ্যাসিওরেঞ্জ ব্যবহার করুন
  • স্যাম্পল অর্ডার দিন
  • সরাসরি যোগাযোগ থাকুন

বিজনেস নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সতর্ক থাকুন এবং প্রতারণামূলক অফার থেকে।

৮. ব্যবসা প্রচার ও বিক্রি :

আপনার পূর্ণ দেশে আনার পর সঠিকভাবে বাজারজাত করাও গুরুত্বপূর্ণ । আপনি নিচের প্ল্যাটফর্ম গুলো ব্যবহার করতে পারেন।

  • ফেসবুক পেজ ও মার্কেটপ্লেস
  • Tiktok / YouTube মার্কেটিং

আপনি চাইলে নিজস্ব ওয়েবসাইটে বিজনেস প্রচার করতে পারেন।

টিপস: ফটোশুট এবং ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে প্রোডাক্ট প্রমোশন করুন।

চীনের সাথে বাণিজ্য করে বাংলাদেশি তরুণ সফল হয়েছে .

১০. ভবিষ্যৎ ট্রেন্ড ও সম্ভবনা :

চীনের সাথে ব্যবসা করে আগামী পাঁচ বছরে আরো জনপ্রিয় হবে। বিশেষ করে যেসব খাতে:

  • স্মার্ট হোম প্রোডাক্ট
  • ইভি (ইলেকট্রিক ভেহিকেল ) পার্টস
  • গ্রীন এনার্জি প্রোডাক্ট
  • কাস্টমাইজড গিফটস

উপসংহার :

চীনের সাথে ব্যবসা শুরু করতে হলে সাহস, ও পরিকল্পনা এবং ধৈর্যের প্রয়োজন । শুরুতে ছোট পরিসরের স্যাম্পল এনে ট্রাই করুন । তারপর ধীরে ধীরে বড় অর্ডারে যান । আজকের দিনে উদ্যোগী মানুষ আগামী দিনের সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেন- শুধু দরকার সঠিক নির্দেশনা

Leave a Comment